
সারা দেশে মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও মহম্মদপুরে মধুমতি নদীতে দেদারছে চলছে মা ইলিশ নিধন। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অবৈধ কার্যক্রম চললেও স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের চরম অবহেলা ও গাফিলতির কারণে উল্লেখযোগ্য কোনো অভিযান চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর ২০২৫ মধুমতি নদীতে একঝাঁক সাংবাদিক উপস্থিত হলে মাছ ধরার দৃশ্য সরাসরি তাদের চোখে পড়ে। এসময় সাংবাদিকদের দেখেই মাছ শিকারীরা দ্রুত নৌকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এমনকি ইলিশ বোঝাই কয়েকটি ট্রলারকেও দ্রুত দৌড়ে পালাতে দেখা যায়।
মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর ঝামা, দেউলী, বাবুখালী, শিরগ্রাম, পাচুড়িয়া, দাতিয়াদহসহ বেশ কয়েকটি স্থানে দিন-রাত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইলিশ মাছ ধরার নৌকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সারারাত মাছ ধরার পর বাবুখালীসহ কয়েকটি স্থানে নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন ঘাটে নিয়মিত মাছ বিক্রির হাট বসছে। মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের চরম গাফিলতির কারণে মহম্মদপুর বাজারেও প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
এছাড়াও রোববার,১২ অক্টোবর ২০২৫ ভোর ৪ টার দিকে সরেজমিনে বাবুখালী শীরগ্রামসহ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি নৌকা নিয়ে মাঝিরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মধুমতি নদীতে মাছ ধরছেন। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সারারাত ইলিশ মাছ ধরা ট্রলারগুলো দ্রুত পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার বেশ কয়েকদিন পার হলেও মহম্মদপুর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মধুমতি নদীতে কোনো অভিযানই পরিচালনা করা হয়নি। মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতি না থাকায় বেপরোয়াভাবে দিনরাতে চলছে মা ইলিশ নিধন। এতে করে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অ: দা:) ফেরদৌসি আক্তার বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছি এবং বিভিন্নভাবে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এরপরও যদি কেউ মাছ ধরে, তবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তবে,
স্থানীয় মহল জানিয়েছেন, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তার ৪ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত মধুমতি নদীতে ইলিশ নিধন রোধে কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেননি এবং সরেজমিনে কোনো তদারকিও করেননি। তার এমন নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে।