আজ সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি সদরদপ্তরের ৬ষ্ঠ তলার সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ব্যাংক, বিপণি বিতান, শপিং মলসমূহের নিরাপত্তা, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে সমন্বয় সভা হয়। সভা শেষে ডিএমপি কমিশনার এ কথা জানান।
রোজার মাস জুড়ে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, জনগণ যদি সহযোগিতা করে তাহলে ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
হাবিবুর রহমান বলেন, রমজান মাসের আমাদের বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সব বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ট্রাফিক। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। এতে নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা দরকার। যারা গাড়ি ব্যবহার করছেন, যারা গাড়িতে চড়ছেন এবং যারা রাস্তার আশপাশে ব্যবসা করছেন তাদের সহযোগিতা দরকার। তা নাহলে ৩০৬ বর্গকিলোমিটার জায়গার ভিতরে যেখানে সোয়া ২ কোটি লোক বসবাস করে সেখানে পুলিশ রাতারাতি ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করে দিতে পারবে না। তবে আমরা আশাবাদী সকলে যদি সহযোগিতা করেন তাহলে ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। আর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয়ভাবে ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
তিনি বলেন, রাস্তায় যারা সংস্কার কাজ করেন; ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ অন্যান্য সংস্থা যে উন্নয়ন কাজ করে থাকেন তারা রমজান মাসে সবার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এসব কাজ বন্ধ রাখবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা। এসব কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানাব।
সড়কে ছিনতাই রমজানে মাসে আরও একটি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, রমজানে মাসে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে আরও একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিভিন্ন শপিংমল ও রাস্তায় এবং ব্যাংকের সামনে থেকে ছিনতাই। এছাড়া অবৈধ মজুদ করে কৃত্রিমভাবে মূল্য বৃদ্ধি এবং খাদ্যদ্রব্যে ভেজালও রমজান মাসে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যা সমাধানে পুলিশ ইতোমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানে আমাদের পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে।
তিনি বলেন, রমজানে মানুষ যেন বাসায় গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন সে লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ক্রাইম বিভাগও কাজ করবে। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। একই সময়ে রাস্তায় আমাদের বিশেষ ডিপ্লোমেন্ট থাকবে যাতে করে মানুষ ঘরে গিয়ে ইফতার করতে পারে। মার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে আমাদের ট্রাফিক ও ক্রাইমের অফিসাররা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবৈধভাবে কেউ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কেউ যদি কৃত্রিম উপায়ে ও কারসাজি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে পুলিশ কাজ করবে।
ঈদের সময় ফাঁকা ঢাকায় ও রমজানে ছিনতাই প্রতিরোধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? উত্তরে তিনি বলেন, ছিনতাই একটা সমস্যা। রমজান মাসে এই সমস্যা সমাধানে একটি বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ছিনতাই প্রতিরোধে তারা সবাই তৎপর থাকবে। আমি আশা করি রমজান মাস ও ঈদের পর পর্যন্ত মানুষ স্বস্তি বসবাস করবে।
বেইলি রোডের ঘটনার পর পুলিশ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করেছে। রমজান মাসে পুলিশ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করবে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তার আগে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যবসায়ীদের সাথে মত বিনিময় করেন,
সমন্বয় সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্পেশাল ব্রাঞ্চ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ডিজিএফআই, এনএসআই, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, সিটি-এসবি, পুলিশ সদরদপ্তর, এমআরটি পুলিশ, তিতাস গ্যাস, ঢাকা ওয়াসা, ডিপিডিসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি, ইসলামপুর কাপড় ব্যবসায়ী সমিতি, বাংলাদেশ ডাল ও ছোলার ডাল ব্যবসায়ী সমিতি, পিঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতি, কাওরান বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ জুয়েলারী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,ডিএমপি হেডকোয়ার্টার এর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বৃন্দ, ডিবি অফিসের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বৃন্দ, উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক ও ক্রাইম জনের ডিসি ও ৫০ টি থানার ওসিসহ বিভিন্ন সাংবাদিকগণ।