চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক সহিংসতার পর যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। খুলছে ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেটের দোকান, বাণিজ্যিক, ব্যাংক-বিমাসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় কারফিউ থাকা সত্ত্বেও রাজধানী ফিরছে আগের সেই চিরচেনা রূপে। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও জনজীবনে স্বস্তি ফেরাতে দিনরাত কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি সদস্য।
ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ক্রাইসিস মূহূর্তে ডিএমপি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে নগরবাসীর প্রশংসা ইতিপূর্বেও কুড়িয়েছে। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের পাশে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। ডিএমপির নিরাপত্তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউই কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। কিন্তু দুর্বৃত্তরা ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশে অরাজকতা সূষ্টির লক্ষে সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাসহ পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে হামলা চালায়। সরকারি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। জনসাধারণের যাতে চলাচলে অসুবিধা সৃস্টি হয় সেজন্য নগরবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং ফ্লাইওভারে আগুন দেয় দুবৃত্তরা। ইতিহাসের জঘন্যতম এই নারকীয় হামলায় বাংলাদেশ পুলিশের তিনজন সদস্যকে জীবন দিতে হয়েছে। আহত হয়েছে ১ হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য। পেশাগত দায়িত্বপালন করতে জীবন দিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীও। জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্য পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের বজ্রদীপ্ত আহ্বানে উদ্দীপ্ত হয়ে তৎকালীন বাঙালি পুলিশের সদস্যরা থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধের সূচনা করেছিলেন সমর ইতিহাসে তা বিরল দৃষ্টান্ত। করোনাকালে যখন মানবিকতার চরম বিপর্যয় হয়েছিল তখন বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে জীবন রক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশ যে সাফল্য অর্জন করেছে বিশ্ববাসী তার স্বীকৃতি দিয়েছে। শান্তিরক্ষা মিশনে বহির্বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশ।
ডিএমপি মহানগরীর অতীতের প্রতিটি ক্রাইসিস মূহূর্তে যেভাবে দায়িত্ব পালন করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, ভবিষ্যতেও সেই সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। দেশ ও জনগণের সেবা প্রদানে অকুতোভয় পুলিশ সদস্যরা নিজের জীবন দিতে পর্যন্ত করতে কুন্ঠাবোধ করেনা। ঢাকা মহানগরবাসীর সহযোগিতা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।