গত প্রায় চার পাঁচ দিন যাবত ফরিদপুর জেলার, ভাংঙা উপজেলার,কাউলিবেড়া ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের কবরস্থানের নামে জায়গা দখল - কাগজ পত্র জালজালিয়াতি - ভূক্তোভূগিকে ভয় ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল তো বটেই বিষয়টি নিয়ে জনমনে অনেকের কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে ।ফরিদপুর ,মাদারিপুর,শিবচরের অনেকেই ঘটনাটি জানতে বেশ আগ্রহী।
মূল ঘটনার সূত্রপাত, অত্র অঞ্চলের কৃতি সন্তান, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব চৌধুরী এম এ হামিদ,তাঁর নিজ জন্মভূমি খাটরা।তাঁর ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ৪৩ শতক জমি তার ওয়ারশিদের সকলের নামে মাঠ পর্চা বি আর এস জরিপে লিপিবদ্ধ হয়।
জমিটি মাইঝাইল মৌজায়।মাইঝাইল মৌজার এস এ খতিয়ান ১৩৭,আর এস খতিয়ান ১৯৫ এবং বি আর এস জরিপে কাগজ পত্র ত্রুটিপূর্ণ না থাকায় চৌধুরী এম এ হামিদের সম্পদ হিসেবে ওয়ারিশদের নামে উক্ত জমি জরিপে লিপিবদ্ধ সম্পন্ন হয়।
বিপত্তির শুরু চৌধুরী এম এ হামিদের মৃত্যুর পর, তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই রশীদ ওরফে বাদশা মিয়া, কিছু অসাধু ও লোভী ভূমির দালাল, খচ্চর শ্রেণির প্ররোচনায়, ১৯৯৯ সালের মার্চ মাসে এস.এ. খতিয়ান অনুযায়ী দখলের উদ্দেশ্য অর্ধেক জমি নিজের দাবী করে জনৈক ইউনুস মাতুব্বরের কাছে বিক্রি করে দেন।
এই বিষয়ে ভূক্তোভূগি পরিবারের সদস্য ফয়সাল রাজু সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন এস এ অনুযায়ী ৪৩ শতক জমির মধ্যে রশিদ ওরফে বাদশা ২১.৫ শতক জায়গা বিক্রি করেছেন তা আইনত সঠিক হয়নি আবার অর্পণ নামাও সঠিক হয়নি এবং চতুর দলাল ওমর আলির প্ররেচনায় সামাদ মিয়া (মৃত) যার মধ্যস্ততায় ওয়াকফর নামে কৌশলে অবশিষ্ট ২১.৫ শতক চৌধুরী হামিদের পরিবারের ২/৩ জন সদস্যদের দিয়ে যে সাফ কাবলা এস এ, আর এস অনুযায়ী করিয়ে নেওয়া হয় তাও আইনত সঠিক নয়।কারন এস এ এবং আর এস অনুযায়ী উক্ত জমিতে চৌধুরী এম এ হামিদের একমাত্র বোন আছমাতুন্নেছার অংশ সহ তারা কবলা করান যা আইন অনুযায়ী সঠিক নয়।কারন বোনের অংশ বৈমাত্রেয় ভাই কোন ভাবেই বিক্রি ও অপর্ন করতে পারেন না এবং অন্য ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরাও তাদের ফুফুর হিস্যাও দান সাফ কাবলা করতে পারেন না।ইসলাম এবিষয়ে খুবই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
সবচেয়ে আশ্চর্য জনক বিষয় হলো ঘটনাটি ১৯৯৯ - ২০০৩ সালের। উক্ত মৌজায় বি আর এস জরিপ চলাকালীন জরিপকারীগন রশিদ ওরফে বাদশার বক্তব্য ও কাগজ পত্র অর্থাৎ বন্টননামা দেখেন এবং এলাকবাসিও উক্ত ভূমি চৌধুরী এম এ হামিদের অংশ বলে জানালে ভূমি জরিপকারী গন ৪৩ শতক জমিই লিপিবদ্ধ করেন এবং কারো আপত্তি থাকলে তা লিখিত আকারে ভূমি অফিসে জানাতে বলেন।গ্রামের মুরুব্বি শ্রেণির কেউ কিন্তু উক্ত জমি কবরস্থান বলে কোথাও বলেন নাই ।সাইজুদ্দিন চৌধুরীর বৈধ্য ওয়ারিশ হিসাবে সে সময়ে রশিদ ওরফে বাদশা (মৃত ২০১২ পর) ও আছমতুন্নেছা (মৃত ২০১২) জীবিত এবং তারা উভয়ই অথবা এলাকাবাসী কোন লিখিত আপত্তি না জানালে ভূমিটি নাল জমি হিসেবে চৌধুরী এম এ হামিদ এর সম্পদ হিসেবে বৈধতা পায় এবং বাৎসরিক খাজনাদি সরকারের নিয়ম মেনেই যথারীতি পরিশোধ হতে থাকে।এক্ষেত্রে একটা বিষয় পরিস্কার হয় চৌধুরী এম এ হামিদ তার একমাত্র বোন ও বৈমাত্রেয় ভাইয়ের সাথে ওয়ারিশ বন্টন সম্পন করেছিলেন।এছাড়াও রশিদ ওরফে বাদশার নিজ স্বাক্ষরিত এক কাগজে উক্ত বন্টনের সাল,মাস ও তারিখ উল্লেখ আছে।
ফয়সাল রাজু আরও বলেন, কবরস্থানের নামে দখলবাজি এবং দখলকৃত জায়গার কাগজ পত্রে অনিয়ম ও জালিয়াতি তিনিই প্রথম ধরতে পারেন।
গোজামিলের ওয়াকফনামায় তার পিতা মরহুম শাহ আলম চৌধুরী স্বাক্ষর সহ চৌধুরী পরিবারের আরও তিন সদস্য স্বাক্ষর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন স্বাক্ষরটি শাহ আলম চৌধুরী স্বেচ্ছায় করেননি বরং তাকে দিয়ে এক প্রকার জোড় করে,ধমক ও মানসকি চাপ সৃষ্টি করে স্বাক্ষর করানো হয়েছে।মরহুম শাহ আলম চৌধুরী তার বৈমাত্রেয় চার বোনের অংশ তাদের লিখিত অনাপত্তি ছাড়া অসম্পূর্ণ ওয়াকফনামা সাফকাবলা করে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন,কিন্তু চাপ প্রয়োগের কারনে তিনি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন।উক্ত হলফ নামায় সনাক্তকারী হিসেবে মালয়শিয়ার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভয়ংকর,দালাল,বাটপার ওমর আলিও স্বাক্ষর করেন।
গ্রামের সকলেই জানেন চৌধুরী শাহ আলম শান্ত,সরল,প্রকৃতির সহজ জীবন যাপন করা একজন সাধারণ মানুষ।তার অনেক বিত্ত বৈভব ছিল না,কিন্ত তিনি একজন আদর্শবান,নীতিবান মানুষ ছিলেন।ফয়সাল রাজু আরও বলেন,আমার পিতার উপর বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে যাদের অমানুষিক চাপ প্রয়োগে চোখের অশ্রু ঝরছে সেই অশ্রু সন্তান হিসেবে আমরা আমাদের হৃদয়ে মুক্তা দানার মতো সাজিয়ে রেখেছি।ঐ অশ্রুগুলো অমানুষের মতো আমরা তাদের ফিরিয়ে দিতে চাই না।তবে এখন থেকে মসজিদ কমিটির সহায়তা নেওয়া ওমর আলি গং সহ ফ্যাসাদ সৃস্টিকারীদের আর কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
ফয়সাল রাজু আরও বলেন আমার পিতা শাহ আলম চৌধুরীকে দিয়ে জোর পূর্বক করানো কাজটি সম্পূর্ণ ভূল,ক্রুটিপূর্ণ এবং তা সংশোধন অবশ্যই হতে হবে।এছাড়াও জোড় পূর্বক দখল করে রাখা শাহ আলম চৌধুরীর ওয়ারিশ হিসেবে ন্যায্য হিস্যার আনুমানিক ৮.৮ শতক জমি মসজিদ কমিটির সহায়তায় কবরস্থানের নামে দখল করে রাখা ওমর আলি গংরা আমাদের অবশ্যই বুঝিয়ে দিতে বাধ্য ।