খাটরা, কাউলিবেড়া ইউনিয়ন, ভাংগা উপজেলা, ফরিদপুর জেলা।অত্র অঞ্চলের কৃতি সন্তান, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব চৌধুরী এম এ হামিদ তাঁর নিজ জন্মভূমি খাটরার সাধারণ মানুষের কল্যাণ বিবেচনায় রেখে ৬৮ সালে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ৪৩ শতক জমি গ্রামবাসীর কল্যাণে খাটরা গ্রামের জন্য নির্ধারিত কবরস্হান হিসেবে মৌখিকভাবে দান করেন।সে সময় খাটরা গ্রামে কোনো কবরস্থান না থাকায় মৃত্যুবরণকারীদের অন্য গ্রামে নিয়ে গিয়ে দাফন করতে হতো। এই প্রেক্ষাপটে চৌধুরী এম এ হামিদ উদ্যোগ ছিল মানবিক ও প্রশংসনীয় এবং নির্ধারিত কবরস্থানটির কিছু উন্নয়ন করেন। তাঁর মা রহিমুন্নেছার মৃত্যুর পর প্রথম দাফনের মাধ্যমে কবরস্থানের কার্যক্রম শুরু হয়।
চৌধুরী এম এ হামিদের মৃত্যুর পর, তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই রশীদ ওরফে বাদশা মিয়া, কিছু অসাধু ও লোভী ভূমির দালালদের খপ্পর ও প্ররোচনায়, ১৯৯৯ সালের মার্চ মাসে এস.এ. খতিয়ান অনুযায়ী কবরস্থানের অর্ধেক জমি নিজের দাবী করে জনৈক ইউনুস মাতুব্বরের কাছে বিক্রি/দাদন দেন। উক্ত ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত এবং গ্রামের বাসিন্দাদের কল্যানে বাধা প্রদান ও অপ্রত্যাশিত হুমকি স্বরুপ ছিল ।
ভূমিখেকোরা কবরখেকো হয়ে উঠলে সমাজের পচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে হঠে।কারন কবরের কংকাল তখন তাদের খাদ্য রস জোগায়।তখন তাদের কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না।
যদিও ঘটনাটি ১৯৯৯ সালের কিন্তু সামনে এসেছে ২০২৫ সালে।খাটরা নামক একটা গ্রামের ১৯৯৯ সালের সমাজ চিত্রের বিশ্লেষণ,কি ভয়াবহ একবার কল্পনা করুন?
কি রকম ঘৃনিত চিন্তা করুন?
তারা কবরস্থানের জমিকেও ছাড় দেয়নি। ঐ ধরনের লোকদের কাছে পরিবার বলে যেমন কিছু নাই,তেমনি তারা সমাজেরও না। ১৯৯৯ সালেই যে গ্রামে কবরখেকো ছিল বলে ধরে নেওয়া যায়,
তাহলে বাংলাদেশের ৬৮০০০ গ্রামের চিত্র কি?
খাটরা গ্রামের এক কবরস্হানের জমি ওয়ারিশ বের করে যাদের ক্রয় করতে হয় তারা কি মানুষ এর পর্যায়ে পরে?
৮০/৮৭ টি পরিবার নিয়ে একটি গ্রাম।গ্রামের একজন মানুষও ভয় ,শংকা, অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতায় ঐ নোংরা সংগবধ্ব কবরখেকোদের তখন প্রতিহত করতে পারেনি অথবা গ্রামবাসীর বিবেক সেভাবে সাড়া দেয়নি।
সমাজের বিবেকের মৃত্যু হলে যা হয়,কবরের জমিও ওদের ওয়ারিশ বের করে ক্রয় করতে হয়।ওরা এতই ক্ষুধার্ত।
টাকার গরম কবরস্হানকেও ছাড় দেয় না।
অথচ গ্রামবাসী আড়ালে তাকে কবরখেকো মাতুব্বর বলে ডাকে।
আরও জানা যায় ২০০৩ সালে অপর এক ব্যক্তি এই সুযোগটি কাজে লাগায়,নাম প্রকাশ না করার শর্তে ও কমিটিতে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে টাকার বিনিময়ে ওই জমি খাটরা কবরস্থান কমিটির কাছে তিনি তাকে দিয়ে অপর্ণ করান এবং নিজে কমিটির সাথে যুক্ত হন।কবরস্থানের আসলে কি কোন কমিটি আছে নাকি বিশেষ কারো ইশারায় পরিচালিত ?
যা প্রশাসনিক সংযোগহীনতা সুস্পষ্ট,দক্ষতা,নৈতিকতা,স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকেই নির্দেশ করে না বরং গভীর সন্দেহের উদ্রেক করে।
দীর্ঘদিনের বর্তমান কমিটির নৈতিক উদাসীনতা ও দূর্বলতাকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে।বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক ও দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য মনে হওয়াই স্বাভাবিক ।বাংলাদেশে কবরস্থানের কংকাল চুরি যেখানে সাধারণ ঘটনা। তাছাড়া অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় খাটরা পশ্চিম পাড়া কবরস্থানের নিরাপত্তা এবং পরিচালনা নিয়েও প্রশ্ন থাকাটা কি একেবারেই অস্বাভাবিক ?
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, সরকারিভাবে কবরস্থানের ওয়াকফ স্বীকৃতি নিশ্চিত এবং কবরস্হানের ঘটনা পূর্নাঙ্গ তদন্ত সহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আর্থিক বিবরনী অডিট করা খুবই জরুরি। কারন একটা গ্রামের কবরস্থানের জমি ক্রয় – বিক্রয়ের ঘটনাতো সারা বাংলাদেশ তোলপাড় সৃস্টি হয়ে যাওয়ার কথা,তাও ১৯৯৯ সালের,এখন ২০২৫ইং সাল চলছে।
এধরণের অনিরাপদ কবরস্হান গুলোতে তল্লাশি দিলে সন্দেহজনক অনেক বিষয় সামনে চলে আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন।
স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় তদারকি ও হস্তক্ষেপ ছাড়া কবরস্থানটির নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা একেবারেই সম্ভব নয়।
গ্রামবাসীর মতে গ্রামে অনেক অনিয়ম আছে।এদের চিহ্নিত করতে গ্রামবাসী মিডায়ার সহযোগিতা চান।তাঁরা আরও বলেন আর কোন কবরখেকো তারা আর দেখতে চান না।তারা চান মিডিয়া এসে খাটরা গ্রামের সকল অনিয়ম বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরুক।
বর্তমান কমিটির সবাই প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নন — তাই সঠিক তদন্ত, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে কবরস্থানের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন । স্হানীয় ভূমি দখলকারী ও লোভী গোষ্ঠী যাতে ভবিষ্যতে যে কারো জমি নিয়ে কোনো প্রকার বিরোধ,দখলবাজী এবং অনৈতিক তৎপরতা চালাতে না পারে,সেজন্য এই খাটরা গ্রামে প্রশাসনিক নজরদারি অত্যন্ত জরুরি ।
অন্যথায়, ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের জটিলতা ও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশংকা আছে।, যা খাটরা গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য বড় ধরনের সামাজিক সংকট ও হুমকি সৃষ্টি করতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।