নরসিংদীর মনোহরদীতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার(১৫ জুলাই) উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের বীর আহমদপুর নামাপাড়া গ্রামে ঘটে গেল এক বেদনার্ত ঘটনা। মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ৮ টার দিকে মাইনুদ্দিনের ভাগ্নি ফাতেমা (২৬) নিজ নানা বাড়ির একটি ঘরের ভেতর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। মর্মান্তিক এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ফাতেমা দুই সন্তানের জননী ছিলেন—এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছোট অবুঝ সন্তান দুটি এখনও বুঝতে পর্যন্ত পারছে না, তাদের মা আর এই দুনিয়াতে নাই। ফাতেমার পিতার নাম নবী হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি লেবুতলা ইউনিয়নের নরেন্দ্রপুর গ্রামে। ফাতেমার বিয়ে হয়েছিল মনোহরদী উপজেলার চালাকচর গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, মানসিকভাবে অসুস্থতার কারণে ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। প্রায় ৭ বছর আগেও তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তখন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। জানা যায়, মানসিক সমস্যার কারণে কখনো কখনো তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হতো, আবার কখনো বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতেন। তার এই মানসিক যন্ত্রণা চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় আজ। নানু বাড়িতে থাকা কালে সকালে অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিবারের লোকজন তার ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান, ফাতেমা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। সবচেয়ে বেদনার বিষয়, ফাতেমা গর্ভবতীও ছিলেন। তার এভাবে চলে যাওয়া যেন একসাথে তিনটি প্রাণের অবসান। স্থানীয়দের ভাষায়, এমন করুণ ঘটনা মনোহরদী উপজেলায় যেন প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। হত্যা, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা—প্রতিদিনই কোনো না কোনো শোক সংবাদ আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সমাজের মানসিক স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবা ব্যবস্থার প্রতি এখনই আরও বেশি দৃষ্টি না দিলে, এমন মর্মান্তিক খবর হয়তো বাড়তেই থাকবে।