মহম্মদপুরে মধুমতি সেতুতে লাইট না জ্বলে ভুতুড়ে পরিবেশে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাতের চলাচল
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার এলাংখালী ঘাটে মধুমতী নদীর উপর নির্মিত ৬০০.৭০ মিটার দীর্ঘ মধুমতি সেতুটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থানীয় সরকার বিভাগ,
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করলেও, বর্তমানে এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সেতুর উপর স্থাপিত স্ট্রিট লাইটগুলো দীর্ঘদিন ধরে সম্পূর্ণ অচল থাকায় রাতের বেলায় এখানে সৃষ্টি হয় এক ‘ভুতুড়ে’ পরিবেশ।
২০২০ সালের ২২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত এই সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। এটি মহম্মদপুর উপজেলাকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর সাথে সংযুক্ত করেছে। সেইসাথে, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দুরপাল্লার পণ্যবাহী যানবাহন ও যাত্রী পরিবহন এই সেতুর উপর দিয়েই চলাচল করছে।
তবে উদ্বোধনের অল্প কিছুদিন পর থেকেই ব্রিজের লাইটগুলো একে একে বন্ধ হয়ে পড়ে। বর্তমানে রাতের বেলায় সেতুটি সম্পূর্ণ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে, যা পথচারী, মোটরচালক এবং পরিবহন শ্রমিকদের জন্য চরম ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুর আশপাশের এলাকা নির্জন হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই, ডাকাতির মত ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আইয়ুব মোল্লা (৪৫) বলেন, "এই অন্ধকারকে কাজে লাগিয়ে নানা অপকর্ম হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে কেউ একা চলাফেরা করতে সাহস পায় না।"
তিনি জানান, লাইটের তার গুলা চোর চক্র চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ফলে আলো আর জ্বলে নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি পঙ্কজ রায় সংবাদ প্রকাশ করলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও মোহাম্মদপুর প্রতিদিন পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এছাড়াও ব্রিজের পূর্বাঞ্চলে মধুমতির পাড় ঘেঁষা ফাঁকা চর এলাকাগুলোতে বিভিন্ন রকম চোরাচালান বেড়ে গেছে এই অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে। এ যেন অপরাধীদের অভয় আশ্রম।
স্থানীয় জনগণ ও বাজার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে— সেতুর স্ট্রিট লাইটগুলো দ্রুত মেরামত করে পূর্ণ আলো ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে নিয়মিত টহল ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রশাসনিক নজরদারি আরো বাড়ানোর জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যাশা, জনগণের এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।