মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার জাঙ্গালীয়া গ্রামের রমজান হোসেন (২৫ ) নামে এক যুবককে মালয়েশিয়ায় ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মালয়েশিয়ায় চাকুরি রত অবস্থায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে এমনটিই অভিযোগ করছেন ওই যুবকের পরিবার।
শুক্রবার ৩০ মে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। মালয়েশিয়া পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।
ঘটনার পর ৭০-৮০ জনের পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত আট জনকে আটক করতে সক্ষম হন বলে যানিয়েছেন তার পরিবার,
নিহত যুবক মহম্মদপুর উপজেলার জাঙ্গালীয়া এলাকার হতদরিদ্র কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ।
নিহত রমজানের বন্ধু মালয়েশিয়া প্রবাসী মো: হানজালা ইসলাম জানান, মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলান নামে একটি বান্ডিল ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করেন রমজান। কাজের সুবাদে মালিকসহ সকলের সাথেই গড়ে ওঠে সখ্যতা। কাজের পারফারমেন্স ভালো থাকায় তাকে ওই কোম্পানীর মালিক লিডারশিপের দায়িত্ব দেন। বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি মায়ানমার সহ অন্যান্য কর্মরত লোকজন। সেই থেকেই রমজানের সাথে কয়েকজনের শুরু হয় মনোমালিন্য। প্রতিদিনের মত ঘটনারদিন শুক্রবারেও কাজ করছিলেন রমজান। কাজের সময় মায়ানমারের এক নারি সহ অন্যান্যদের সাথে হাসি তামাশায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি তার ফ্রাক্টরির মায়নমারের কয়েকজন পুরুষ সহকর্মী ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। এ সময় ওই ফ্যাক্টরির বস তাদেরকে কাজের সময় হাসি-তামাশা বন্ধ করেন অন্যথায় পুলিশকে জানাবেন বলে ভয় দেখান তাদেরকে। এ বিষয়ে মায়ানমারের এক যুবকের সাথে তার কথাকাটাকাটির ঘটনাও ঘটে।
পরে কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার সময় বাস থেকে নামার সময় আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা কয়েকজন মায়নমার যুবক তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করলে সখোনেই তার মৃত্যু হয় । পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধারকরেন এবং শনিবার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।
রমজানের পিতা আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে সামান্য বিষয় নিয়েই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে । তিনি এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। সেই সাথে দ্রæত লাশটি দেশে আনার বিষয়ে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
রমজান চররুইজানী এলাকার মুকুল সরদারের মেয়ে নাজনীনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
সংসারের অভাব মেটাতে ২ বছর আগে দেশ ছেড়ে প্রবাস জিবন বেছে নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।
রমজানের স্ত্রী কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, একটু ভালোভাবে বাঁচতে দায়িক দিনা করে স্বামীকে মালয়েশিয়া পাঠান তার পরিবার। অনেকদিন যাবৎ সেখানে কাজ ও পাচ্ছিলনা রমজান। সবেমাত্র ১ বছর কাজ শুরু করেছিল নিয়মিতভাবে। বিদেশে পাড়ি জমালেও এখনও ধারের ৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে পারেনী রমজান । তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের মধ্যে বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর । মেয়েটি প্রতিবন্ধী । অভাবের সংসারে কিভাবে দুটো সন্তান নিয়ে দিন কাটবে সেই চিন্তা করে কান্নাকাটি করে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি।
শেষবারের মত স্বামীর মুখ দেখতে ব্যাকুল রমজানের স্ত্রী ও তার পরিবার।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনুর আক্তার বলেন , বিষয়টি এখনও তিনি জানেননা তবে বিস্তারিত জেনে লাশ দেশে আনার জন্য সকল প্রকার সহযোগীতা তার পরিবারকে করা হবে বলে আশ^স্ত করেন।