আজ সোমবার (৩ জুন ২০২৪) সকালে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বিপিএম, পিপিএম (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।
রাজধানীর পরীবাগে হিজড়াদের (তৃতীয় লিঙ্গ) হামলায় মো. মোজাহিদ নামে এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) চোখ নষ্ট হওয়ার ঘটনায় রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে চারজন হিজড়াকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো তানিয়া, তন্নী ওরফে তিথী, কেয়া ও সাথী ওরফে পাভেল।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রমনা থানার এসআই মোজাহিদসহ পুলিশের একটি দল পরিবাগ এলাকায় রাত্রিকালীন টহল ডিউটি করছিলেন। রাত অনুমান তিনটার দিকে সংবাদ আসে হিজড়াদের একটি দল একজন রিকশাওয়ালাকে প্রচন্ডভাবে মারধর করে তার কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে। হিজরাদের কবল থেকে রিকশাওয়ালাকে উদ্ধার করে। এক পর্যায়ে হিজড়ারা পুলিশের ওপর হামলা করে, পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে একটি ইট এসআই মোজাহিদের চোখে এসে পড়ে। এতে মুজাহিদের চোখের চশমার কাচ ভেদ করে চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পুরো চোখ থেতলে যায়। এতে তার ডান চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে গুরুতর আহত এসআই মোজাহিদ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে তার চিকিৎসায় বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসআই মোজাহিদের মতো একজন তরুণ অফিসার সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে আহত হওয়ার বিষয়টি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন যে, আহত এসআই মোজাহিদের চোখের চিকিৎসার জন্য যা যা করণীয়, দেশে বা দেশের বাইরে, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ঘটনায় ৩১ মে ২০২৪ তারিখ রমনা মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার পর মগবাজার রেলগেট এলাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত তানিয়া, তন্নী ওরফে তিথী ও কেয়াকে গ্রেফতার করে রমনা থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড আবেদনসহ প্রেরণ করা হয়। আদালত তিন দিনেরে রিমান্ড মন্জুর করে। রিমান্ডে গ্রেফাতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার মগবাজার এলাকা থেকে হামলায় জড়িত অপর অভিযুক্ত সাথী ওরফে পাভেলকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, হিজড়াদের মধ্যে যারা অপরাধের সাথ জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।